গুলিস্তান বান্দুরা সড়কে কাজে ধীরগতি, দুর্ভোগ চরমে

বাবুবাজার ব্রিজ পাড় হয়ে কদমতলী মোড়ের দুই ধারে সুন্দর রাস্তা দেখে আপনার আনন্দিত হওয়ার কারণ নেই! আপনি যে দিকই যাবেন সামনে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে ধূলার রাজ্য। রোদের দিনে সাদা বালি আর বৃষ্টিতে কাঁদার খনি।

কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু, সড়কজুড়ে ছোটবড় অসংখ্য গর্ত, সড়কের মাঝখানে বিশাল অংশ দেবে গেছে। প্রকৃতির সাথে বদলে যায় রাস্তাঘাটের অবস্থাও। একটু বৃষ্টিতে পরিবেশ ভারি করে রাখা ধুলাবালি গুলো রুপ নেয় কাঁদা নর্দমায়। কিছু কিছু রাস্তায় হেঁটে যাওয়া তো দূরের কথা মোটরসাইকেল সহ ছোট ছোট যানবাহন চলাচলই বন্ধ হয়ে যায় প্রায়।

epsoon tv

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বহুদিন ধরে চলছে ঢাকা-নবাবগঞ্জ রোডের প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজ। এর কেরানীগঞ্জ অংশের কিছু কাজ শেষ হলেও এখনো অনেক যায়গা পড়ে আছে সংস্কারের অপেক্ষায়। রোহিতপুর ইউনিয়নের ঢাকা বিসিক শিল্পনগরী সংলগ্ন লাখিরচর নতুন মেইলগেটের সামনের রাস্তাটিতে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। একটু বৃষ্টিতে কাঁদা-জ্বল আর রুদ্রে যেনো ধূলোর রাজ্য! আবার কোথাও পিচঢালাই এর জন্য অপেক্ষায় থাকা রাস্তাগুলোও বৃষ্টি তে কর্দমাক্ত আর রুদ্রে ধূলিসাৎ হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যানবাহন পড়ে প্রতিদিনই ঘটছে কোনো না কোন দুর্ঘটনা। ধুলাবালি তে আচ্ছাদিত রাস্তায় গাড়ী গুলোকে দিনের বেলায়ও লাইট লাগিয়ে চলতে দেখা গেছে

গুলিস্তান-বান্দুরা রোডের কোল ঘেঁষেই ঢাকা জেলার নামকরা সব স্কুল কলেজ ও একধিক মাদরাসা অবস্থিত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে প্রায় লাখ খানেক ছাত্রছাত্রী। কেরানীগঞ্জের কেরানীগঞ্জ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইস্পাহানী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও স্কুল, সরকারি শাক্তা মডেল হাই স্কুল,রোহিতপুর উচ্চবিদ্যালয়, রোহিতপুর আইডিয়াল হাইস্কুল, নতুন সোনাকান্দা উচ্চবিদ্যালয়, লাখিরচর উচ্চবিদ্যালয় সহ সিরাজদিখান ও নবাবগঞ্জ উপজেলার বহু স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা অবস্থিত এই রাস্তার পাশে। প্রতিদিন ধূলাবালি না হয় কর্দমাক্ত রাস্তায় যাতায়াত করতে হয় স্কুলে।

সরকারি শাক্তা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী শারমিন ও নুর নাহার জানান, আমাদের বাড়ী কোনাখোলা, স্কুলে যেতে আমাদের বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় এই মেইন রোড দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। বহু দিন ধরে এই রাস্তায় কাজ চললেও এখনো শেষ হচ্ছেনা। ঠিক মতো পানিও ছিটায় না রাস্তায়। তাই ধূলাবালি সহ্য করে প্রতিদিন স্কুলে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। মাথাব্যথা, ঠান্ডা লেগেই থাকে। সামনে পরিক্ষা হওয়ায় সমস্যা আরো বেশি।

কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দোহার ও পদ্মার ওপারের লাখ লাখ মানুষের যাতায়াত এই রাস্তায়। বহু দিন ধরে সংস্কার কাজ চলছে এই রাস্তায়। রাস্তার অনেক যায়গায় সংস্কার কাজ শেষ হলেও যায়গায় যায়গায় অর্ধেক কাজ করে, কোথাও আবার পুরোনো কার্পেট উঠিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখার কারনে যাত্রীরা ও পথচারীরা আছে চরম দুর্ভোগে। বিশেষ করে রোগী, বাচ্চা ও বৃদ্ধাদের জন্য এই রাস্তা একেবারেই অনুপযোগী।

স্থানীয়রা জানান, আমরা রাস্তার সংস্কার চাই। রাস্তাঘাটের উন্নতি মানে আমাদের উন্নতি। কিন্তু এতো দিন ধরে চলতে থাকা রাস্তার কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা হতাশ। ব্যবসা বানিজ্য ও চাকরি ক্ষেত্র যেতে আমাদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। সরকারের কাছে আমাদের আকুতি আপনারা অনেক ভালো কাজ করছেন। আমাদের এই রাস্তাটিও দ্রুত কাজ শেষ করে আমাদের কে মুক্তি দিবে।

এ ব্যাপারে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাজাহান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো অধিকাংশই রোডস এন্ড হাইওয়ে এর আওতাধীন। আমাদের অধিনে থাকা সংস্কার কাজ গুলো আমরা করতে শুরু করেছি। রামেরকান্দা,কামার্তা,রাজাবাড়ি, ভাওয়ারভিটি রাস্তাটিও সংস্কার ও প্রসস্থ করণ কাজ চলছে। বাকি কাজ শীগ্রই করা হবে। রোডস এন্ড হাইওয়ের ইঞ্জিনিয়ার কে ফোনে পাওয়া যায়নি।

আপনি আরও পড়তে পারেন